Thursday, November 13, 2025
HomeBusinessপাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের সুযোগ নেই: বাংলাদেশ ব্যাংক

পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের সুযোগ নেই: বাংলাদেশ ব্যাংক

ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ এবং বিসিএমসির সিদ্ধান্ত বিবেচনায় পাঁচটি ব্যাংক একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারী কিংবা শেয়ারধারকদের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয় বিবেচনার আপাতত কোনো সুযোগ নেই। তবে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বা শেয়ারধারকদের স্বার্থ রক্ষার্থে তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার এই পাঁচটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে তাদের দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকগুলোতে প্রশাসকও নিয়োগ দেয়। গতকাল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ব্যাংকগুলোর শেয়ারের মূল্য ‘শূন্য’ ঘোষণা করেন। 

তিনি আরও জানান, ব্যাংকগুলোর বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে শেয়ারধারীরা কোনো অর্থ পাবেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের এই ঘোষণার পর গতকাল বিকেল থেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। আজ লেনদেন শুরুর আগেই বিএসইসি ব্যাংক পাঁচটির লেনদেন স্থগিতের কথা জানালো।

সম্প্রতি একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঘোষণার পরেই ব্যাংকগুলোর সাধারণ বিনিয়োগকারী যারা এ ব্যাংকগুলোর দুরবস্থার জন্য দায়ী নয়, তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার দাবি উঠে। তবে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টি বিবেচনা করার আপাতত কোনো সুযোগ নেই।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম চর্চার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এফসিডিও-এর কারিগরি সহায়তা ও মতামত বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ অধ্যাদেশের আওতাধীন ব্যাংকগুলোর আমানতকারী, শেয়ারহোল্ডারসহ বিবিধ পাওনাদারের অধিকারের বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে।

ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর ধারা ১৬(২) (ট), ২৮ (৫), ৩৭(২) (গ) এবং ৩৮ (২) অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক রেজল্যুশন টুলস প্রয়োগের সঙ্গে সংগতি রেখে রেজল্যুশনের অধীন তফসিলি ব্যাংকের শেয়ারধারক, দায়ী ব্যক্তি, এডিশনাল টিয়ার ১ মূলধন ধারক, টিয়ার ২ মূলধন ধারক এবং টিয়ার ২ মূলধন ধারক ব্যতীত সাবঅর্ডিনেটেড ডেট হোন্ডারের উপর লোকসান আরোপ করতে পারবে। তাছাড়া ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর ধারা ৪০-এ অবসায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেজল্যুশনের অধীন তফসিলি ব্যাংককে বিলুপ্ত করা হলে শেয়ারধারকরা যে পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হতেন, তার চেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হলে তাকে ক্ষতির পরিমাণের পার্থক্যের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করার বিধান রাখা হয়েছে। এ ধারার বিধান অনুসারে, রেজল্যুশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিযুক্ত কোনো স্বতন্ত্র পেশাদার মূল্যায়নকারী কর্তৃক সম্পাদিত মূল্যায়নের ভিত্তিতে শেয়ারধারকরা কোনো ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য হলে সেই ক্ষতিপূরণ দেয়া যাবে।

আন্তর্জাতিক কনসালটিং ফার্ম পরিচালিত সম্পদের গুণগতমান পর্যালোচনা (একিউআর) এবং বিশেষ পরিদর্শনে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আলোচ্য ৫ ব্যাংক বড় ধরনের লোকসানে রয়েছে এবং তাদের নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ঋণাত্মক। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকিং সেক্টর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির (বিসিএমসি) সভায় ৫টি সংকটাপন্ন ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের রেজল্যুশন প্রক্রিয়ায় ব্যাংকের লোকসানের দায়ভার বহন করতে হবে মর্মে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ অবস্থায় ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ এবং বিসিএমসির সিদ্ধান্ত বিবেচনায় পাঁচটি ব্যাংক একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারী কিংবা শেয়ারধারকদের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয় বিবেচনার আপাতত কোনো সুযোগ নেই। তবে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বা শেয়ারধারকদের স্বার্থ রক্ষার্থে তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।










RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments