টানা পাঁচ দিন বৃষ্টির ফলে ফেনী শহরে অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের অধিকাংশ এলাকায় হাঁটু পানির নিচে। শহরের জলাবদ্ধতার কারণে নিচু স্থানের অনেক বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। এত পরম দুর্ভোগে পড়েছে শহরবাসী।
এদিকে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যার আশঙ্কা করছে এলাবাসীরা।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৪০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে, যা গত ২৪ ঘণ্টায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ। তবে বিকেল ৫টার পর থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় শহরের রাস্তা থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলি। সকালে অনার্স পরীক্ষা থাকায় পরীক্ষার্থীরা অনেকেই ভিজেই পরীক্ষা দিতে দেখা গেছেন। এ ছাড়া অফিসমুখী ও স্বল্প আয়ের লোকদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। রাস্তায় জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত যানবাহন চলাচল কম ছিল।
পানি কমার সাথে সাথে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। হঠাৎ জলবদ্ধতার কারণে শহরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির চলমান অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা বাতিল করেছে বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে।
ফেনী আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় আরো টানা দুই দিন ধরে ভারি ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৪০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে। যা গত ২৪ ঘণ্টায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ।
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মুজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, এ বৃষ্টিপাত আগামী দুই থাকতে পারে। কখনো ভারি বা কখনো হালকা বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। এতে ফেনীতে অবস্থিত নদী গুলির পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে, বিকেল ৩টায় সিলোনিয়া নদীর পানি বিপদ সীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে পরশুরামের সাহেব বাজারের দক্ষিণে সিলোনিয়া নদীর পানি বেধিবাঁধের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে লোকালয়ে পানি ডুকেছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া মহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা ৫০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছে। পশুরামের বল্লারমুখের বেধিবাঁধের কাজ অসমাপ্ত থাকায় কালিয়াকাপুর গ্রামের আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বাধেঁর এই অংশটি দ্রুত বন্ধ না করা গেলে আরো কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ছাড়া ছাগলনাইয়া উপজেলার নিম্নাঞ্চল ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে পানি ঢুকেছে বলে জানা গেছে। সোনাগাজী, দাগনভুঞাঁ উপজেলায় পানি বাড়ছে। বৃষ্টি চলমান থাকলে এ সকল উপজেলা গুলিতে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

